বিয়েতে অস্বীকৃতি, বাবার গুলিতে মেয়ে নিহত

Just Now


নিজের পছন্দের ছেলেকে বিয়ে করতে চাওয়ায় বাবার গুলিতে প্রাণ হারালেন এক মেয়ে। ঘটনাটি ঘটেছে ভারতের মধ্যপ্রদেশের গোয়ালিয়র শহরের গোলা কা মন্দির এলাকায়।

বুধবার (১৫ জানুয়ারি) ভারতীয় গণমাধ্যম এনডিটিভি এক প্রতিবেদনে জানায় মঙ্গলবার রাত ৯টার দিকে পুলিশের উপস্থিতিতেই মেয়েকে গুলি করে হত্যা করেন তার বাবা মহেশ গুর্জার। নিহত মেয়ের নাম তনু গুর্জার।

পরিবারের পছন্দের ছেলের সঙ্গে চার দিন পর তনুর বিয়ে হওয়ার কথা ছিল। কিন্তু তনু এতে রাজি না হয়ে নিজের প্রেমিক ভিকিকে বিয়ে করার ইচ্ছা প্রকাশ করেন। এতে ক্ষিপ্ত হয়ে মহেশ গুর্জার এই মর্মান্তিক কাজটি করেন।

সোশ্যাল মিডিয়ায় ভিডিও পোস্ট

ঘটনার কয়েক ঘণ্টা আগে তনু একটি ভিডিও পোস্ট করেছিলেন। ৫২ সেকেন্ডের ওই ভিডিওতে তিনি বলেন,

‘পরিবার আমাকে তাদের পছন্দের ছেলেকে বিয়ে করার জন্য জোর করছে। কিন্তু আমি ভিকি নামে একটি ছেলেকে ভালোবাসি এবং তাকে বিয়ে করতে চাই। পরিবার প্রথমে এটি মেনে নিলেও পরে অস্বীকার করে। তারা আমাকে প্রতিদিন মারধর করে এবং মেরে ফেলার হুমকি দেয়। আমার কিছু হলে এর জন্য আমার পরিবার দায়ী থাকবে।’

ঘটনাস্থলে পুলিশ ও পঞ্চায়েতের উপস্থিতি

ভিডিওটি ভাইরাল হওয়ার পর পুলিশ সুপারিনটেনডেন্ট ধর্মবীর সিংয়ের নেতৃত্বে কর্মকর্তারা তনুর বাড়িতে যান। সেখানে পরিস্থিতি সমাধানের জন্য পঞ্চায়েতের সদস্যরাও উপস্থিত ছিলেন। তবে বাকবিতণ্ডার একপর্যায়ে মহেশ গুর্জার দেশীয় অস্ত্র দিয়ে তনুর বুকে গুলি চালান। একই সময় তার চাচাতো ভাই রাহুল তনুর কপাল ও ঘাড়ে গুলি করেন। এতে ঘটনাস্থলেই তনুর মৃত্যু হয়।

গ্রেপ্তার ও তদন্ত

ঘটনার পর মহেশ গুর্জারকে পুলিশ গ্রেপ্তার করে এবং হত্যাকাণ্ডে ব্যবহৃত অস্ত্র জব্দ করে। তবে রাহুল পালিয়ে গেছেন, তাকে গ্রেপ্তারের চেষ্টা চলছে।

ভিকি ও তনুর সম্পর্ক

তনুর প্রেমিক ভিকি উত্তর প্রদেশের আগ্রার বাসিন্দা। গত ছয় বছর ধরে তাদের মধ্যে সম্পর্ক ছিল। তনু চেয়েছিলেন এই সম্পর্ককে বৈধতা দিতে, কিন্তু পরিবারের আপত্তি তার জীবনের করুণ পরিণতির কারণ হয়ে দাঁড়ায়।

পুলিশি পদক্ষেপ

পুলিশ জানিয়েছে, তনুর সোশ্যাল মিডিয়া অ্যাকাউন্ট পর্যালোচনা করা হচ্ছে। পাশাপাশি অভিযুক্তদের বিরুদ্ধে কঠোর আইনগত ব্যবস্থা নেওয়া হবে। এই হৃদয়বিদারক ঘটনা পারিবারিক সিদ্ধান্তের চাপ এবং সামাজিক বিধিনিষেধের ফলে ঘটে যাওয়া সহিংসতার একটি দৃষ্টান্ত হয়ে থাকল।




Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *