ট্রাম্পের কাছে বাস্তববাদী পদক্ষেপ আশা করছে ইরান

আন্তর্জাতিক


ট্রাম্পের কাছে বাস্তববাদী পদক্ষেপ আশা করছে ইরান

প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের নেতৃত্বাধীন যুক্তরাষ্ট্রের আসন্ন প্রশাসন মধ্যপ্রাচ্যের দেশগুলোর স্বার্থের প্রতি ‘সম্মান’ প্রদর্শন এবং ‘বাস্তববাদী’ দৃষ্টিভঙ্গি অবলম্বন করবে বলে প্রত্যাশা করছে ইরান। সোমবার ইরানের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের মুখপাত্র ইসমায়েল বাকাই সাপ্তাহিক প্রেস ব্রিফিংয়ে এই প্রত্যাশা কথা জানিয়েছেন। -এএফপি, রয়টার্স।
গতকাল সোমবার স্থানীয় সময় বেলা ১২টায় (বাংলাদেশ সময় রাত ১১টা) যুক্তরাষ্ট্রের ৪৭তম প্রেসিডেন্টের শপথ নেবেন ডোনাল্ড ট্রাম্প। দ্বিতীয় মেয়াদে হোয়াইট হাউসের মসনদে আনুষ্ঠানিকভাবে বসার আগেই মধ্যপ্রাচ্যে নিজের নিয়োগ করা দূতের মাধ্যমে ইসরায়েল-হামাসের ১৫ মাসের যুদ্ধের অবসানে একটি চুক্তি কার্যকর করেছেন ট্রাম্প। তেহরানে সংবাদ ব্রিফিংয়ে ইসমায়েল বাকাই বলেছেন, ‘‘আমরা আশা করছি, যুক্তরাষ্ট্রের নতুন সরকারের দৃষ্টিভঙ্গি এবং নীতিগুলো বাস্তবসম্মত ও আন্তর্জাতিক আইনের ওপর ভিত্তি করে নেওয়া হবে। যা ইরান-সহ এই অঞ্চলের দেশগুলোর স্বার্থ ও আকাঙ্ক্ষার প্রতি শ্রদ্ধাশীল হবে।’’
ফিলিস্তিনের গাজা উপত্যকার ক্ষমতাসীন গোষ্ঠী হামাসের সঙ্গে যুদ্ধে ইসরায়েলকে সমর্থন করায় যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট জো বাইডেন নেতৃত্বাধীন বিদায়ী প্রশাসনের নিন্দা জানিয়েছেন বাকাই। তিনি বলেন, ইরানের সঙ্গে পারমাণবিক চুক্তি পুনরুজ্জীবিত করতে যেকোনও ধরনের গুরুত্ব দেখাতে ব্যর্থ হয়েছে বাইডেনের প্রশাসন।
প্রথম মেয়াদে ডোনাল্ড ট্রাম্প ইরানের বিরুদ্ধে ‘‘সর্বোচ্চ চাপের’’ নীতি অনুসরণ করেছিলেন। ২০১৫ সালের যুগান্তকারী পারমাণবিক চুক্তি থেকে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রকে প্রত্যাহার করে নেওয়ার সিদ্ধান্ত নেন তিনি। তেহরানের পারমাণবিক কর্মসূচি সীমিত করার জন্য ইরানের সঙ্গে জয়েন্ট কম্প্রিহেনসিভ প্লান অব অ্যাকশন (জেসিপিওএ) নামে পরিচিত ওই পরমাণু চুক্তিতে পৌঁছায় যুক্তরাষ্ট্রসহ বিশ্বের ছয় শক্তিধর দেশ। যুক্তরাষ্ট্র ছাড়াও ইরানের সঙ্গে চুক্তিতে স্বাক্ষরকারী বাকি দেশগুলো হচ্ছে ফ্রান্স, ব্রিটেন, জার্মানি, চীন ও রাশিয়া।
কিন্তু ২০১৮ সালে যুক্তরাষ্ট্রের সাবেক প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প ‘ত্রুটিপূর্ণ’, ‘একপেশে’, ‘এর কোনো ভবিষ্যৎ নেই’ অভিযোগ তুলে চুক্তি থেকে যুক্তরাষ্ট্রকে বের করে নিয়ে যান। যুক্তরাষ্ট্রের বেরিয়ে যাওয়ার পর চুক্তির শর্তগুলো মেনে চলার ব্যাপারে ইরানও উদাসীন হয়ে পড়ে। এরপর তেহরানের ওপর আবারও অর্থনৈতিক নিষেধাজ্ঞা আরোপ করা হয়। ওয়াশিংটনকে চুক্তি থেকে প্রত্যাহার করে নেওয়ার পর ঐতিহাসিক এই চুক্তি ভেঙে পড়ে। এমনকি চুক্তি থেকে বের হয়ে যাওয়ার পাশাপাশি ইরানকে অর্থনৈতিক ভাবে পঙ্গু করতে আরও নিষেধাজ্ঞা আরোপ করেছিলেন ট্রাম্প। তেহরান চুক্তিটি পুনরুজ্জীবিত করার প্রচেষ্টা চালালেও শেষ পর্যন্ত তা ব্যর্থ হয়।


Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *